অনুসরণকারী best

Translate

Followers

04/08/2020

আপনার সম্পর্কে এমন কি আকর্ষণীয় ঘটনা আছে যা অন্য কেউ জানে না?

কেউ জানেনা এমন উত্তর কেউ হয়তো কোরাতে পাবলিকলি জানাবেনা।আপনি বরং আকর্ষণীয় ঘটনা জানতে পারেন।

আমরা যখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে তখন বনলতা(রূপক নাম) নামে রূপবতী এক ম্যাম খন্ডকালের জন্য ক্যাম্পাসে আসেন।তিনি আমাদের ৪ বছরের সিনিয়র ছিলেন।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বার প্রথম হওয়ায় আর আমাদের এখানে মাস্টার্স করার সুবাদে তিনি ৩ বছর এখানে থেকে পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান।

রীতিমত কেউ কেউ তার জন্য কবিতা লিখতেন।তার ক্লাসের সময় ক্লাসের অমনোযোগী ছাত্রটাকেও বড্ড মনোযোগী দেখাতো। তিনি বোঝানোর সময় স্বাভাবিকত কেউ পলক ফেলতো না।মেনে নিতেই হবে তিনি উপরওয়ালার সৃষ্ট চোখ ধাঁধানো জীব।কে ম্যামকে কতো বেশী ভালোবাসেন এটা যেন ক্লাসের ফ্যাশনে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো।

ফটো:ধরুন এটা বনলতার কল্পিত কোনো ছবি।তার সম্মানার্থে তার নিজের ছবি প্রকাশ করলাম না…

দুর্ভাগ্য আমিসহ গুটিকতেক হতভাগার যাদেরকে বারবার প্রশ্ন করে হিমশিম খাইয়ে দেবার জন্য আর পিছন থেকে হো হো করে হেসে বিরক্ত করবার জন্য প্রথম ক্লাসেই ম্যাম বের করে দেন ।যদিও এই বখাটেপনা আমরা সকল নতুন ক্লাসেই করে থাকি।ম্যাডাম ঠিক আমাদের মেনশন করে রেখেছিলেন বলির পাঠা করার জন্য।পরের ক্লাসে জাস্ট কাশি দেবার মতো প্রাকৃতিক বিষয়েও বাইরে বের করে দেন।ব্যাপারটা তখন চিন্তায় পরিণত হয়।অবিকল তৃতীয় ক্লাসেও অংক করতে দিয়ে কেবল আমাদের খাতাই চেক করেন এবং বের করে দেন।

তারপরের ক্লাস টেস্টে তিনি কেবল আমাদেরকেই গার্ড দেন এবং সে পরীক্ষায় আমরা কেউই ৪/৫ (out of 20)এর বেশী পাইনি ।সামনে ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় বিষয়টা আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে-যদি কোনো পরীক্ষায় ম্যাম গার্ড দেন তবে কি হবে!!

ইতিমধ্যে বেসিক(ছদ্মনাম) নামক এক বন্ধুর মারফতে জানতে পারি ম্যামের সাব্বির নামক তারই এক ব্যাচমেট যিনি জাহাঙ্গীরনগরের ম্যাথের টিচার যার সাথে দীর্ঘদিন প্রণয় থাকার পর ব্রেকআপ হয়ে গেছে এবং সাব্বির স্যার সদ্য বিয়ে করে ছুটি থেকে এসেছেন। এই ব্যাপারটি পরদিন ক্লাসের টক অব দ্যা ডে।এখন ম্যাম জাস্ট আমাদের দেখতে পারেন না, দয়া এতোটুকুই যে তিনি এখন আর ক্লাস থেকে বের করে দেন না।

পরীক্ষার দিন পনেরো আগে ,চায়ের আড্ডায় জয় ধর নামের এক চাটগাঁইয়া বন্ধু বিড়ি খেতে খেতে একটা ইফেক্টিভ আইডিয়া বের করে।

আমরা যদি ম্যাডামের জন্য একটা যোগ্য পাত্রের সন্ধান করি আর তা তাকে জানাই তাহলে আমাদের সাথে তার একটা সুসম্পর্ক সৃষ্টি হতে পারে।

আইডিয়াটা আমাদের পাঁচজনের ভালো লাগলেও বিড়ালের গলায় ঘন্টা কে বাধবে এখানে একটা কিন্তু থেকে গেলো যেহেতু আমাদের হাতে কোনো পাত্র নেই এবং ব্যাপারটা পুরোপুরি মিথ্যের উপর ভিত্তি করে করা হচ্ছে।প্রয়োজনের তাগিদে আমাদের ভিতরে তিনজনকে রেডি করা হলো এবং বাকি দুজন সহায়ক ভুমিকা পালনে রাজী হলো।সেই পদক্ষেপ ছিলো নিন্মরূপ:——

একদিন দুপুরে লাঞ্চের পর ম্যাডামকে একা পেয়ে আমরা দুজন রুমে ঢুকি আর একজন দরজায়।বাকি দুজন বারান্দায়।

ম্যাম:কি খবর? কি চাই?

আমি: ম্যাম একটু আর্জেন্ট কথা ছিলো।

ম্যাম:(অন্যদিকে তাকিয়ে)বলে ফেলো।

জয়:ম্যাম আমাদের এক বড়ভাই বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজছে ।একটা ম্যাচিউর বউ চায় আর আমরা আপনার ছবি তাকে পাঠিয়েছি।

ম্যাম:(একটু আগ্রহ নিয়ে)কি বলো এসব!কি করে ছেলে?

আমি :মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ম্যাম।এসএসসি ২০০২ এর ব্যাচ।

ম্যাম:তোমরা কি করে বুঝলে সে আমায় পছন্দ করবে?

জয়: ম্যাম আপনি যে ধরনের সুইট,যা কিউট তাতে কারো চোখ ফিরবেনা বিশ্বাস।

ম্যাম:(লাজুক চোখে)আল্লাহ! কি যে বলো তোমরা। (চেয়ার দুলিয়ে মশকারি ভঙ্গিমায়)মেরিনতো আমার তেমন পছন্দ না তবুও——।বাসা থেকেও ছেলে দেখছে ,,,বুঝলা!!!

কিন্তু ম্যাডামের পছন্দ না বলার ভিতরে ছিলো হাজারো আগ্রহের প্রকাশ তা আমরা ধরে ফেলেছিলাম।

আমরা:আচ্ছা ম্যাম, ভাইয়াকে বলে জানাবো।

কথা না বাড়িয়ে বের হয়ে আসি।ভাগ্যবশত আমাদের হাতে কোনো পাত্র ছিলোনা। ম্যাম দেখা করতে চাইলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।

আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো ইয়ার ফাইনালে তার সহানুভূতি যা তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন।আমরাও রাজার হালে পরীক্ষা দিয়েছি।আমরা জানতাম আমরা নিজে থেকে না বললে, লজ্জা ভেঙে ম্যাম কখনোই আমাদেরকে তার বিয়ের ব্যাপারে বলতে পারবেনা।

পরীক্ষার হলে আমাদের সাথে ম্যামের শখ্যতা ছিলো চোখে পড়ার মতো।বাকী সবাই অবাক হতো।সেবছর আমাদের সিজিপিএ ছিলো কুরবানির গরুর মতো রমরমা।

আমরা পুনরায় বিয়ের কথা বলবো সেই আশায় ম্যামের ধৈর্য যখন শেষ হলো ততোদিনে আমাদের থার্ড ইয়ার চলে আসলো।এই ইয়ারে ম্যামের আর ক্লাস নেই এবং ম্যামেরও মাস ছয়েক পরে বিয়ে হয়ে গেলো।ম্যাম বুঝতে পারলো এটা সাজানো নাটক ছিলো। একটা বার আমাদেরকে সাইজের জন্যে সে মুখিয়ে ছিলো ।

হায় কপাল! থার্ড ইয়ার ফাইনালের প্রথম পরীক্ষাতেই ম্যামের গার্ড। গতবারের তেল এবছর জেল হয়ে গড়ালো।কোনোমতে সেই সাবজেক্টে ৪০ পেয়েছিলাম। কতটা ভয়ানক তিনি হতে পারেন তা সেদিন দেখিয়েছিলেন।আমি নিজেও পরীক্ষার হলে নাভিশ্বাস্বের উপক্রম।

.

.

.

.

এখন ম্যামের একটা মেয়ে হয়েছে খুব ফুটফুটে।দাওয়াত ছারাই আমরা পাঁচজন গিয়েছিলাম মেয়েটার জন্মদিনে।বিশাল একটা গিফট নিয়েছিলাম।ম্যামের মন ভরে গেছিলো।

ম্যাম এখন বুঝেছে আমরা বখাটেরাই তাকে প্রকৃত ভালোটা বেসেছিলাম।জাহাঙ্গীরনগর আসার পর ক্লাসের আর কেউ তার খোঁজ নেয়নি সে কথাতেই বোঝা গেলো মনের আকুতিটুকু।

বেচে থাকুক ম্যামের প্রতি ভালোবাসা।আজীবন, অনন্তকাল।

No comments:

ফেসবুকটি বিনামূল্যে নয়

Welcome our bloge   ফেসবুকটি বিনামূল্যে নয়  আমাদের ব্লগa স্বাগতম   ফেসবুক নিখরচায় নয় ইন্টারনেটের অনেকাংশের অর্থনীতি দুটি মূল্যবান সামগ্রী...

Search This Blog

Labels