অনুসরণকারী best

Translate

Followers

Showing posts with label রাগকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি?. Show all posts
Showing posts with label রাগকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি?. Show all posts

04/08/2020

ক্রোধ কি ও তার প্রতিকার?

ক্রোধ কি ও তার প্রতিকার?





প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য শরীরে মধ্যে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় তাকে ক্রোধ বলে। পিথাগোরাস বলেছেন, 'ক্রোধ দুর্বুদ্ধি থেকে শুরু হয়ে অনুশোচনায় সমাপ্ত হয়'। ক্রোধ মানুষকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে এবং মন্দ কাজ করার প্রেরণা জোগায় ফলে মুখ দিয়ে এমন অন্যায় কথা ও অন্যায় কাজ করে ফেলে, যার পরিণামে অনেক ক্ষতি ও লজ্জার সম্মুখীন হতে হয়।
সকল প্রকার ক্রোধই কি দোষণীয়?
কুরআন ও হাদীছে সাধারণভাবে ক্রোধ একটি দোষণী গুণ বলে উল্লেখ হলেও বিশেষ ক্ষেত্রে তা দোষণীয় নয় বরং প্রশংসনীয়, তাই আলেমগণ ক্রোধকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। একটি হচ্ছে নিন্দনীয় আর অপরটি হচ্ছে দোষণীয়।


((১)) নিন্দনীয় ক্রোধঃ
সাধারণ দুনিয়াবী বিষয়ে রাগন্বিত হওয়া নিন্দনীয়। এ ধরনের রাগ থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সর্তক করেছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, কুস্তি লড়ে পরাজিত করতে পারলেই শক্তিশালী হওয়া যায় না; বরং শক্তিশালী তো সেই, যে ক্রোধের (দুনিয়াবী স্বার্থ বিষয়ক ক্রোধের) সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। সুতরাং দৈহিক শক্তি দিয়ে মানুষকে পরাভূত করতে পরলেই তাকে বলবান বা শক্তিমান বলা যায় না; বরং প্রকৃত বলবান তাকেই বলা যাবে যে ক্রোধের (দুনিয়াবী স্বার্থ বিষয়ক ক্রোধের) সময় নিজের উপর কর্তৃত্বশালী হয়, সে সময় নাহক বা বেঠিক কোন কথা ও কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়। ক্রুদ্ধাবস্থায় প্রবৃত্তির অনুসরণে সীমালংঘন করে কাউকে গালি গালাজ করা, অপবাদ দেয়া, আঘাত জনিত কথা বলা, প্রহার করা, সম্পদের ক্ষতি করা ইত্যাদি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখাই প্রকৃত শক্তিমানের পরিচয়।
((২)) প্রশংসনীয় ক্রোধঃ
আল্লাহর জন্য বা সত্যের জন্য যে রাগ করা হয় তা প্রশংসনীয়। বিশেষ করে আল্লাহ ঘোষিত হারামে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ক্রুদ্ধ হওয়া অধিক প্রশংসার দাবীদার। নবী-রাসূলগণ এরূপই ছিলেন। তাঁরা নিজের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে কখনো ক্রুদ্ব হতেন না বা কারো থেকে প্রতিশোধ নিতেন না। তাই দ্বীনের দাঈগণও অন্যায় ও হারাম কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে যদি প্রয়োজন বশতঃ যদি রাগান্বিত হন তাহলে এই রাগ নিন্দনীয় রাগের আওতায় পড়বে না। বর্তমান সময়ে একে শ্রেণীর দাঈকে দেখা যায় তারা তো শির্ক-বিদআত ও অন্য কোন প্রকার খারাপ কাজের জেরালো প্রতিবাদ করেনই না বরং অন্যরা খারাপ কাজের প্রতিবাদে সামান্য কঠিন কথা ও মন্তব্য করলে তাও সমর্থন করেন না, যা নবী-রাসূল ও দ্বীনের পূর্ব যুগের দাঈদের অনুসরণীয় নীতির সম্পূর্ণ খেলাফ।
মুসা (আঃ)এর সাথে তার কওমের ঘটনা, যখন তিনি তূর পর্বত থেকে ফিরে আসলেন, দেখলেন লোকেরা আল্লাহকে পরিত্যাগ করে বাছুর পূজা আরম্ভ করেছে। তখন তিনি তাদের উপর প্রচন্ড ক্রুদ্ধ হলেন। এমনকি হাতের তক্তা, যার মধ্যে তাওরাত লিপিবদ্ধ ছিল মাটিতে ফেলে দিলেন। ভাই হারুনের দাড়ি ধরে তাকে টানতে লাগলেন। আল্লাহ তা’আলা উক্ত ঘটনা উল্লেখ করে বলেনঃ
وَلَمَّا رَجَعَ مُوسَى إِلَى قَوْمِهِ غَضْبَانَ أَسِفًا قَالَ بِئْسَمَا خَلَفْتُمُونِي مِنْ بَعْدِي أَعَجِلْتُمْ أَمْرَ رَبِّكُمْ وَأَلْقَى الْأَلْوَاحَ وَأَخَذَ بِرَأْسِ أَخِيهِ يَجُرُّهُ إِلَيْهِ قَالَ ابْنَ أُمَّ إِنَّ الْقَوْمَ اسْتَضْعَفُونِي وَكَادُوا يَقْتُلُونَنِي فَلَا تُشْمِتْ بِي الْأَعْدَاءَ وَلَا تَجْعَلْنِي مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
“আর মূসা যখন নিজ জাতির নিকট ফিরে এলেন, তখন রাগান্বিত ও অনুতপ্ত হয়ে বললেন, আমার চলে যাওয়ার পর তোমরা আমার কি নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্বটাই না করেছ। তোমরা স্বীয় প্রভুর হুকুম থেকে কি তাড়াহুড়া করে ফেললে এবং ফলকগুলো ছুড়ে ফেলে দিলেন। আর নিজের ভাইয়ের মাথার চুল ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলেন। ভাই বললেন, হে আমার মায়ের পুত্র, লোকগুলো তো আমাকে পরাভূত করে ফেলেছিল এবং আমাকে তারা মেরে ফেলারও উপক্রম করেছিল। সুতরাং শত্র“দের নিকট আমাকে হাস্যের পাত্র বানইও না। আর আমাকে জালেমদের সারিতে শামিল করো না।” (সূরা আ’রাফঃ ১৫০) এভাবেই প্রত্যেক শক্তিশালী ঈমানদারের উচিত স্বীয় প্রভুর অধিকার বিনষ্ট হলেই সেখানে রাগান্বিত হওয়া এবং উহার প্রতিবাদ করা।
কুরআন-হাদিসে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার অনেক পথ বর্ণিত আছে, এক. ক্রুদ্ধ ব্যক্তির স্বীয় অবস্থানের পরিবর্তন করা। রাসূল সা: বলেন, ‘যখন তোমাদের কারো রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায় তা হলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (তিরমিজি) রাগের গতি হলো ওপরের দিকে তাই বলা হচ্ছে রাগ দমন করার জন্য গতি নিচের দিকে করে দাও।
দুই. বিপরীতমুখী বস্তু দ্বারা ক্রোধের প্রতিকার। রাসূল সা: বলেন, ‘রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে, শয়তানকে তৈরি করা হয়েছে আগুন থেকে। আগুন নির্বাপিত হয় ঠাণ্ডা পানি দ্বারা। ঠাণ্ডা পানি পান করলে রাগের কারণে রক্তে যে উষ্ণতা সৃষ্টি হয় সেই উষ্ণ ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। এভাবে রাগ পড়ে যাবে। (আবু দাউদ)
তিন. শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা। রাগের মধ্যে শয়তানের ওয়াসওয়াসার দখল থাকে। প্রকৃতপক্ষে এ রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তা বের করার জন্য আউজু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম পড়ো। এ জন্য আল্লাহ পাক বলেন, ‘যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোনো উসকানি তোমাকে পায় তাহলে আউজু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম পড়ো।’ (হা-মিম সাজদা-৩৬)
চার. ক্রোধ সংবরণ করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধকারী এবং তা থেকে বিরত থাকা ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ককারী দলীলগুলো স্মরণ করা এবং তা হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করা। যখন তোমার রাগ হয় তখন মনে করবে, আমার সৃষ্টিকর্তা আমার চেয়ে অনেক অনেক বড়। তিনি আমার প্রতি রাগ হলে আমার কী উপায় হবে? অতএব আমি তাকে ক্ষমা করতে না পারলে সৃষ্টিকর্তাও আমাকে ক্ষমা করবেন না। আমার রাগ হজম করে তাকে ক্ষমা করে দিলে আল্লাহও আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। এভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। হযরত ইবনে উমর (রা.) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জানতে চাইলেন, এমন কোনো কাজ আছে কি যা আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করবে? তিনি বললেন, 'তুমি রাগ দেখাবে না।' (বুখারি)।
পাঁচ. যার উপর রাগ হয় তাকে সম্মুখ থেকে সরিয়ে দেয়া বা নিজে অন্যত্র সরে যাওয়া এবং রাগের সময় চুপ থাকা, প্রাসঙ্গিক বিষয়েও কথা না বলা। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা শিক্ষা প্রদান কর, মানুষের উপর সহজ কর, কঠোরতা আরোপ করোনা, তোমাদের কেউ রাগান্বিত হয়ে গেলে সে যেন চুপ থাকে।
ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ ও সহনশীলতার শিক্ষাঃ রাসূল সা: সাহাবায়ে কেরামের সামনে বললেন, সব নবী ছাগল চরিয়েছেন। সাহাবাদের একজন প্রশ্ন করলেন আপনিও চরিয়েছেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমিও কিছু দিরহামের বিনিময়ে এক জনের ছাগল চরিয়েছি। ছাগলের মধ্যে একটা বিপরীতমুখী স্বভাব আছে। যে দিকে নিতে চায় তার বিপরীত দিকে যেতে চায় এমন কি রশি লাগিয়ে সামনের দিকে টানলে পেছনের দিকে যেতে চায়। ক্রোধান্বিত ব্যক্তি ছাগল চরাতে পারে না। ছাগল চরানোর মাধ্যমেই ক্রোধ প্রশমিত করার কৌশল শিখে নিতে হয়। মানুষের মধ্যে বিপরীতমুখী স্বভাব আছে, তার জন্য দ্বীনী দাওয়াত ও শিক্ষা দানের ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন করতে হয়।

ক্রোধ দমনের বৈজ্ঞানিক কৌশল

ক্রোধ দমনের বৈজ্ঞানিক কৌশল









ক্রোধ দমনের বৈজ্ঞানিক কৌশল

কেউ অল্পতে রেগে যায়, কেউ সহজে রাগই করে না। মনের মধ্যে জমিয়ে রাখা অবদমিত ক্রোধ আমাদের ভালো থাকার পেছনের শত্রু। এটি মানুষের সঙ্গে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক নষ্ট করে। বিনষ্ট করে মনের শান্তি। মনোচিকিৎসক ডা. মোহিত কামালের সঙ্গে কথা বলে ক্রোধ দমনের বৈজ্ঞানিক কৌশল সম্পর্কে লিখেছেন— শামছুল হক রাসেল

 

সুখ চাই। ভালোবাসা চাই।  চাই একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে বাঁচতে। যথানিয়মে কি আমাদের সব চাওয়া পূরণ হয়? পাওয়ার অপূর্ণতার ফাঁক দিয়ে আমাদের ভিতর ঢুকে যায় রাগ, ক্রোধ। এখান থেকেই শুরু হয় অশান্তি। নষ্ট হয় সম্পর্ক।

ক্রোধের সময় কী ঘটে দেহে : ব্রেন সিগন্যাল পাঠায়। ঝড়োগতিতে নিঃসরণ ঘটে সক্রিয় হরমোন নর-এড্রিনালিন। ♦ নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, গভীর হয়। রক্তচাপ বেড়ে যায়। চোখের মণির স্ফীতি ঘটে। ♦ দেহের অন্যান্য অংশ থেকে রক্তপ্রবাহ দ্রুত ছুটে আসে হৃদপিণ্ডে, ব্রেন ও পেশির দিকে। ♦ হজমক্রিয়া থেমে যায়। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। ♦ হাতের মুঠি বন্ধ হয়ে আসে, দাঁতে দাঁত খিঁচিয়ে আসে, পরিপাকতন্ত্র খামছে ধরে। ♦ মূলত ক্রোধের সময় দেহমনে জেগে ওঠে ডেঞ্জার সিগন্যাল বা লালবাতি।

‘ম্যানেজিং এঙ্গার’ গ্রন্থের লেখক গিললিনডেন ফিল্ডের মতে, রাগ হচ্ছে দেহের স্বাভাবিক আবেগীয় ও দৈহিক প্রতিক্রিয়া। যখন কেউ থ্রেটের মুখোমুখি হয় তার রাগ হতেই পারে।

ক্রোধ প্রশমন : সাম্প্রতিক মনোগবেষণা থেকে জানা যায়, ক্রোধ পোষ মানানোর যেসব সনাতন পদ্ধতি চলে আসছিল তা সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। দৈহিক ভঙ্গিমা যেমন বালিশে বা নরম কিছুতে পাঞ্চ করে রাগ ঝাড়ার যে কৌশলের প্রচলন আছে, সাময়িকভাবে পজেটিভ ফলাফল থাকলেও এসব পদ্ধতি মূলত পরিস্থিতি থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখার প্রবণতাই আমাদের বৈশিষ্ট্যে গেঁথে দেয়। রাগ প্রশমনের এ ধরনের কৌশলের উল্টা পিঠে এভাবেই আগ্রাসী আচরণের বীজ রোপিত হয়ে যেতে পারে আমাদের মাঝে। একটি বিষয় খোলাসা হওয়া দরকার। নতুন কৌশল বর্ণনায় রাগ অবদমিত করে রাখার বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে না। বরং রাগ পোষ মানানোর জন্য পরীক্ষিত নতুন এ গবেষণার বৈজ্ঞানিক কৌশলগুলো যথেষ্ট কার্যকর। বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অংশ হিসেবে ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি ইত্যাদি চিকিৎসায় সাফল্যের সঙ্গে কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির সুনির্দিষ্ট প্রটোকল ব্যবহার করা হয়। ক্রোধের ক্ষেত্রেও একই কৌশলে রাগ শাসন করার কৌশল রপ্ত করা যায়।

ক্রোধ দমনে নতুন কিছু কৌশল : অধৈর্য বা বিরক্তি সৃষ্টি করে এমন ঘটনাগুলো প্রথমে নিখুঁতভাবে শনাক্ত করুন। নোট করে রাখুন। পরবর্তীকালে শান্ত থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে নিজেকে এক্সপ্রেস করুন। তাড়াহুড়ো বা সজোরে পরিস্থিতির ভিতর নিজেকে ছুড়ে দেওয়া নয়, অপরকে দোষারোপ করাও নয়, এমনকি বিতর্কিত শব্দ ব্যবহার করা থেকেও নিজের জিহ্বাকে শাসন করতে হবে এ সময়। মনে রাখুন, ক্রোধের সময় ছুড়ে

দেওয়া শব্দগুলো আপনার দেহ ও মনে স্ট্রেস রিএকশন ঘটায়। এ রিএকশন মানেই দেহের ক্ষতি, মনের

ক্ষতি, ব্রেনের ক্ষতি, হার্টের ক্ষতি। ধীরে ধীরে উচ্চারণ করুন ওম ম ম! রিলাক্স। রিলাক্স।

দশ পর্যন্ত গণনা : উন্মত্ততার সময় এ প্রক্রিয়াটি চর্চা করার কৌশল রপ্ত করে নিন। ধীরে ধীরে চর্চা করতে হবে। গভীর টানে প্রশ্বাস নিন। ছাড়ুন নিঃশ্বাস। অথবা রাগ উতরে ওঠার ঘটনা থেকে মুহূর্তের জন্য দূরে সরিয়ে নিন নিজেকে। এর অর্থ এই নয় যে, পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে গেলেন। শান্ত হলেই আবার ফিরে আসুন।  হাস্যরসের উপাদান : রসবোধই মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ঘটনা থেকে আপনাকে খানিকটা দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে। ঘটনার ভেতরই ঘুরপাক খেয়ে দেখুন কৌতুকের কিছু উপাদান পাওয়া যায় কিনা। রাগ তরল

করার জন্য রসবোধ  পরিস্থিতি থেকেই খুঁজে বের করা যায়।

চিন্তার গণ্ডি বাড়ান : কোনো কোনো চিন্তা নিজের মাঝে ক্ষোভ জাগাতে পারে। বিক্ষুব্ধ করতে পারে। প্রথমে চিন্তাগুলোর জটিল গিঁট থেকে বিকল্প চিন্তার পথ বের করে নিতে হবে। এরপর পাল্টা এগ্রেশন জাগে এমন পরিস্থিতিগুলো পরিবর্তনের চেষ্টা চালাতে হবে।

ক্রোধবিষয়ক বই রাখুন : যখন নিজের মাঝে ক্রোধের উন্মত্ততা জাগবে, ১০ ডিগ্রি রাগের স্কেলে, তা মেপে নিন। যদি স্কোর ৪ বা ততোধিক হয়, পরিস্থিতি বিষয়ক চিন্তা এবং দৃশ্যমান ইমেজগুলো নোট করে রাখুন। ক্রোধের মেয়াদকাল, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি কি কি, বিস্তারিত লিখে রাখুন। কী পদ্ধতিতে, কী পরিস্থিতিতে, কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, পুরো বিষয়টি তখন আপনার কাছে খোলাসা হয়ে যাবে।

নিজের প্রতি ফিরে তাকাতে হবে : ক্রোধের কারণে নিজ জীবনে কতটুকু মূল্য দিতে হয়েছে একবার নেড়েচেড়ে দেখুন। রাগের কারণে কি কোনো মধুর সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? ভেঙে গেছে? কর্মক্ষেত্রে কি কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে? ফলশ্রুতিতে কি কোনো ধরনের দৈহিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া ঘটেছে? বাস্তব প্রমাণ হাতে এলে, মূল্যায়ন সঠিক হবে। নিজেকে সামাল দেওয়ার কৌশল ভিতর থেকেই আপনাকে তখন রক্ষা করবে।

রাগকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি?

একটা ছেলে ছিল যার খুব মেজাজ খারাপ হত। ছোট খাটো প্রত্যেকটা বিষয়ে সে রেগে যেত।

একদিন, তার বাবা তাকে পেরেকের একটি ব্যাগ দিয়ে বলল, "প্রতিবার যখন তোমার রাগ হবে, সামনের দেয়ালে একটি করে পেরেক ঠুকবে।"

এরপর ছেলেটি তার বাবার বুদ্ধিমত কাজ শুরু করে দিল।

প্রথম দিন, সে ৫০ টি পেরেক ঠুকল। পরের দিন, ৪০ টি।

প্রতিবার যখন সে পেরেক ঠুকতে যেত, রেগে যাওয়ার কারণে সে অনুতপ্ত হত—রাগের মধ্যে দেয়ালে পেরেক ঠোকা যেন একটা চ্যালেঞ্জ!

ধীরে ধীরে, ছেলেটা বুঝতে পারল যে দেয়ালে পেরেক ঠোকার চেয়ে বরং রাগ নিয়ন্ত্রণ করাটাই সহজ এবং তার ঠোকা পেরেকের সংখ্যা কমতে লাগল।

অবশেষে, একদিন সে আর একবার-ও রাগল না, এবং সে এর আনন্দ অনুভব করল।

এখন তার বাবা তাকে আরও একটি কাজ দিল, "তুমি যদি সারা দিনে একবার-ও রেগে না যাও তবে দেয়াল থেকে একটি করে পেরেক তুলে ফেলবে।"

বেশ কিছুদিন পরে, সে সমস্ত পেরেক উঠিয়ে ফেলল।

এবার তার বাবা তাকে দেয়ালের কাছে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল যে সে কী দেখতে পাচ্ছে?

ছেলেটি উত্তর দিল যে সে দেয়ালে অনেকগুলো গর্ত দেখতে পাচ্ছে।

তারপর তার বাবা বলল, "এই গর্তগুলি এমন সব ক্ষতচিহ্নের মতো যা তুমি রাগের সময় অন্যদেরকে দিয়ে ফেল। এরপর তুমি যতবারই দুঃখ প্রকাশ কর না কেন, দাগ কিছুতেই উঠে না।"


আমি তাই আপনাকে দুটি জিনিস প্রস্তাব করব :

  • একবার বলে ফেলা কথা আর ফিরিয়ে আনা যায় না। আপনার রাগ অন্যকে কষ্ট দেয় এবং একটি জ্বালাময় ছাপ ফেলে যা চিরকাল স্থায়ী হয়।
  • যখনি আপনার রাগ হবে, "একটি পেরেক ঠুকবেন।"

    খুব সহজ কাজ যা আপনি করতে পারেন একটা ছোট্ট পকেট ডায়েরি সাথে রাখা। প্রতিবার যখন আপনার রাগ হবে, ডায়েরিতে একটি করে লাইন লিখবেন।

    তারপর রাতের বেলা গুনে দেখবেন সেদিনে কতটা লাইন লিখলেন। আপনি যদি এটিকে একটি অভ্যাস বানিয়ে ফেলেন তবে প্রতিবার যখন আপনার রাগ হবে তখন প্রতিবার আপনার সেটা নোট করে রাখার কথা মনে পড়বে।

    পরোক্ষভাবে, আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার রাগ হচ্ছে। আর যেহেতু এখন আপনি অবগত এবং সচেতন আছেন, আপনার পদক্ষেপগুলি নিয়ন্ত্রণ করা এবং রাগ বশীভূত করা আপনার পক্ষে সহজ হয়ে যাবে।

আশা করব—সেই দিনটি খুব শীঘ্রই আসুক যেদিন আপনার ডায়েরিতে একটাও লাইন লিখতে হবে না।

ফেসবুকটি বিনামূল্যে নয়

Welcome our bloge   ফেসবুকটি বিনামূল্যে নয়  আমাদের ব্লগa স্বাগতম   ফেসবুক নিখরচায় নয় ইন্টারনেটের অনেকাংশের অর্থনীতি দুটি মূল্যবান সামগ্রী...

Search This Blog

Labels